আপনাদের আন্তরিক অভিন্দন ও শুভেচ্ছা

Wednesday, July 4, 2018

বান্দরবন জেলার ইতিহাস

১. সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : বৃটিশ শাসন আমলে ১৮৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে জেল।
ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন সময়ে বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার অধীন
ছিল । ক্যাপ্টেন মাsেথ ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার প্রথম সুপারিনটেনডেন্ট।
১৮৬৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার সুপারিনটেনডেন্ট পদটির কার্যক্রম আরো
বিস্তৃত করে ১৮৬৭ সালে এই পদটির নামকরণ করা হয় ডেপুটি কমিশনার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার প্রথম ডেপুটি কমিশনার ছিলেন টি, এইচ লুইন। ১৯০০
সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তিনটি সার্কেলে
বিভক্ত করা হয়- চাকমা সার্কেল, মং সার্কেল এবং বোমাং সার্কেল। প্রত্যেক
সার্কেলের জন্য একজন সার্কেল চীফ নিযুক্ত ছিলেন। বান্দরবান তৎকালীন
সময়ে বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার
কারণে এই জেলার আদি নাম বোমাং থং । বান্দরবান জেলা ১৯৫১ সালে
মহকুমা হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করে। এটি রাংগামাটি জেলার
প্রশাসনিক ইউনিট ছিল। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালের ১৮ই এপ্রিল তৎকালীন
লামা মহকুমার ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক সীমানাসহ সাতটি উপজেলার সমন্বয়ে
বান্দরবান পার্বত্য জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
২. নামকরণ : বান্দরবান জেলার নামকরণ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এলাকার
বাসিন্দাদের প্রচলিত রূপ কথায় আছে অত্র এলাকার একসময় বাস করত।
অসংখ্য বানর। আর এই বানরগুলো শহরের প্রবেশ মুখে ছড়ার পাড়ে পাহাড়ে
প্রতিনিয়ত লবন খেতে আসত। এক সময় অনবরত বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি
বৃদ্ধি পাওয়ায় বানরের দল ছড়া পাড় হয়ে পাহাড়ে যেতে না পারায় একে
অপরকে ধরে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পাড় হয়। বানরের ছড়া পারাপারের এই
দৃশ্য দেখতে পায় এলাকার মানুষ। এই সময় থেকে এই জায়গাটির পরিচিতি
পায় ‘ম্যাঅকছি ছড়াহিসেবে। মার্মা ভাষায় ম্যাঅক অর্থ বানর আর ছি: অৰ্থ
বাঁধ । কালের প্রবাহে বাংলাভাষিদের সাধারণ উচ্চারণে এই এলাকার নাম লাভ
করে বান্দরবান হিসেবে।
৩. আয়তন : (প্রায়) ৪৪৭৯.০৩ বৰ্গ কি. মি. ।
৪. লোকসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ৩,০০,৭৪০ জন। পুরুষ- ১,৬৩,৫৪০ ও মহিলা,
১,৩৭,২০০। বৃদ্ধির হার : ২.৬৪% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ৮৭ জন।
৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম : ০৭টি। বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম, রুমা,
বোয়াংছড়ি, থানচি ও নাইক্ষ্যংছড়ি ।

৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ০৭টি। বান্দরবান, রাওয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি,
আলীকদম, রুমাথানচি ও লামা।
৭. সংসদীয় আসন : ০১টি (ক) বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
৮. বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ : ইউ. কে. চিং (বীর বিক্রম), কেয়ার্সা অংমারমা, মংসুপ্রশ্ন, ডা:
মংউসাথোয়াই মারমা ও ডা. প্রত্নসান মারমা।
৯. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-৩৫৪ কি. মি.।
১০. যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : ঢাকা-সায়েদাবাদ, মতিঝিল বাস স্টেশন, কেন্দ্রীয়
বাস স্টেশন বান্দরবান। এনডব্লিউডি কোড নম্বর : ০৩৬১ ও পোস্ট কোড-
৪৬০০
১১. পত্রপত্রিকা : দৈনিক নতুন বাংলাদেশ, সচিত্র মৈত্রী, মাসিক চিম্বুক, বান্দরবান,
নীলাচল ইত্যাদি।
১২. পৌরসভা-০২টি ও ইউনিয়ন-২৯টি।
১৩. উপজেলা ভূমি অফিস-০৭টি।
১৪. মৌজার সংখ্যা-৯৩টি ও গ্রামের সংখ্যা-১৪৮২টি।
১৫. শিক্ষার হার-৪১০৬%।
১৬শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-৩৬৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-২৭টি,
কলেজ-০৪টি ও মাদ্রাসা-১৫টি।
১৭. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-২৯৭টি, মন্দির-২০৭টি ও গীর্জা-১১৩টি।
১৮. চিকিৎসা কেন্দ্র : হাসপাতাল-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-০৪টি, ক্লিনিক
৩১টি ও পারিবারিক কল্যাণ কেন্দ্র-২০টি।
১৯. নদনদীর নাম : পদ্মা, মহানন্দাপুনর্ভরা ও পাগলা ।
২০. উল্লেখ যোগ্য ফসল : আনারস, কলাকাঠাল, আদালেবু ও তামাক।
২১. দর্শনীয় স্থান : মেঘনা পর্যটন কমপ্লেক্স, চিম্বুক, শৈল প্রপাত, প্রান্তিক লেক,
বগালেক, কেওক্রাডং, মিরিঞ্জা, ঋজুক জল প্রপাত ও নীলাচল পর্যটন
কমপ্লেক্স। ।
২২. জেলার ঐতিহ্য : পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট ১১টি নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠীর বসতি
রয়েছে। এদের সকলেই বান্দরবান জেলায় বসবাস করেন। এ জেলায়
বসবাসরত নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠির রয়েছে আলাদা আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি ।
রাজ পূর্ণাহ, সাংরাই, প্রবারনা পূর্ণিমারথটানা অনুষ্ঠান ইত্যাদি তাদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য।

No comments:

Post a Comment