আপনাদের আন্তরিক অভিন্দন ও শুভেচ্ছা

Wednesday, July 4, 2018

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার ইতিহাস

১. সৃষ্টির প্রেক্ষাপট , ১৭৯৩ খ্রি. ত্রিপুরা জেলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিকাংশ এলাকা ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৩০
সালে সরাইল, হরিপুর, বেজুরা ও সতরকন্ডল পরগনা, ময়মনসিংহ হতে ত্রিপুরা।
জেলার কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৮৬০ সালে নাসিরনগর মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিকাংশ এর অধীনস্থ হয়। ১৮৭৫ সালে নাসিরনগর মহকুমার
নাম পরিবর্তন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা করা হয়। তৎপূর্বে ১৮৬৮ খ্রি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর পৌরসভায় উন্নীত হয়। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে বৃহত্তর কুমিল্লা
জেলা পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্গত হয়। ১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার পূর্ব পাকিস্তান
অংশের নামকরণ হয় কুমিল্লা জেলা । তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি মহকুমা শহর
নামে পরিচিত ছিল। স্বাধীনতা উত্তর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সময় ১৯৮৪
সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে জেলা ঘোষণা করা হয়।
২. নামকরণ : বাংলা সেন বংশের রাজত্বকালে এই এলাকায় কোন অভিজাত ব্ৰাহ্মণ।
পরিবার ছিল না। ফলে পূজাপার্বণে হিন্দুদের খুবই অসুবিধা হতো। তাই রাজা
লক্ষণ সেন “কন্যকুঞ্জ" থেকে কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবার এখানে এনেছিলেন।
সেই ব্রাহ্মণদের আস্তানা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামের সৃষ্টি হয়েছে।
৩. আয়তন : (প্রায়) ৩২২০১৫ বর্গ কি. মি.।
৪. জনসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ২৮,৪০৪৯৮ জন। পুরুষ-১৩,৬৬, ৭১১ ও মহিলা
১৪,, ৭৮৭। বৃদ্ধির হার : ১.৬৮% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ১৫১০ জন।
৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম ঃ ০৯টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, আশুগঞ্জআখাউড়া,
নবীনগর, নাসিরনগর, কসবাবাগ্ধারামপুর, সরাইল ও বিজয় নগর।
৬. থানার সংখ্যা ও নাম ঃ ০৯টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, আশুগঞ্জ, আখাউড়া
নবীনগর, নাসিরনগর, কসবা, বাগ্ধারামপুর, সরাইল ও বিজয় নগর।
৭. সংসদীয় আসন : ৬টি। (১) নাসিরনগর উপজেলা ও সদর উপজেলার বুধ ও
চান্দুরাহরষপুর ইউনিয়নসমূহ। (২) সরাইল, আশুগঞ্জ উপজেলা ও সদর ।
উপজেলার মজলিশপুর, তালশহর (পূর্ব) ও বুধল ইউনিয়ন, (৩) বুধন্তি, চান্দুরা
হরষপুর, মজলিশপুর, তালশহর(পূর্ব) ও বুধল ইউনিয়ন ব্যতীত সদর।
উপজেলা। (৪) আখাউড়া ও কসবা উপজেলা। (৫) নিম্নবর্ণিত ইউনিয়নসমূহ
ব্যতীত নবীনগর উপজেলা : বড়িকান্দি, সলিমগণ্ড । (৬) বাগ্ধারামপুর উপজেলা
ও নবীনগর উপজেলার নিম্নবর্ণিত ইউনিয়নসমূহ : বড়িকান্দি ও ছলিমগঞ্জ ।
৮. বিশিষ্ট ব্যক্তি : সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ড. আকবর আলী খান, ওস্তাদ
আলী আকবর খা, অদ্বৈত মল্লবর্মন, কবি অজয় ভট্টাচার্য, ওস্তাদ সুবল দা, কবি আল মাহমুদ, কবি আন্দুল কাদির, সৈয়দ আবুল হাদী, চিত্রনায়ক আলমগীর, টি
আলী, আহমেদ হুমায়ুন, শফিক রেহমান, আলী ইমাম, আন্দুল কুন্দুস মাখন,
লুৎফর রহমান রিটন, আহসানুল মজিদফজল শাহাবুদ্দিন, মিজানুর রহমান।
৯. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-১০২ কি. মি. ও রেলপথে-১২৬ কি. মি.।
১০ .যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : ঢাকা-কমলাপুর, মতিঝিল, সায়েদাবাদ বাস স্টেশন,
কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, আশুগঞ্জ বাস স্টেশন, ঢাকা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বাস স্টেশন। রেল : ঢাকাকমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে
স্টেশন, আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। লঞ্চ : আশুগঞ্জ ও ভৈরব নৌ-বন্দর
ইত্যাদি। এনডব্লিউডি কোড নম্বর : ০৮৫১ ও পোস্ট কোড-৩৪০০।
১১. পত্রপত্রিকা : দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আজকের হালচাল, সমতট বার্তা, প্রজাবন্ধু,
তিতাস কওঁ, দিন দর্পণ, চলার পথে, সহযাত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিদিন, আমার
জেলাএকুশে আলোসাপ্তাহিক তিতাস, মা, সংকেত, অগ্নিবাণী, তিতাস বাণী,
নাসিরনগর, দেশ দর্পণ, তিতাসের খবর, ইশরাক, আশুগঞ্জ খবর ইত্যাদি।
১২. পৌরসভা০১টি ও ইউনিয়ন-৯৮টি।
১৩. উপজেলা ভূমি অফিস-০৯টি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস-৭৮টি।
১৪. মৌজার সংখ্যা-৯৯৩টি ও গ্রামের সংখ্যা১৩৩১টি।
১৫. মোট জমি-৫,৬৩৪৮৭ একর, আদর্শ গ্রাম-০৯টি । শিক্ষার হার-৩৯৪৫%।
১৬শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-১,১৫৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-২৩২টি,
কলেজ-৩৭টি ও মাদ্রাসা১০৫টি।
১৭. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ- ৪,৫০০টি, মন্দির-১৫৮টি ও প্যাগোডা-০৬টি ।
১৮. চিকিৎসা কেন্দ্র : হাসপাতালের সংখ্যা-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-৬টি ও
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র- ২৪টি।
১৯. উল্লেখযোগ্য ফসল : ধান, গম, , সরিষাআলু, খেসারীপিয়াজ ইত্যাদি।
২০. নদনদীর নাম : তিতাস, মেঘনা, আউলিয়াজুরীকালাছড়ি, খাস্তি, ছিনাইছানি,
ডোলভাঙ্গা, পাগলা, পুটিয়াবলভদ্ৰ, বলাক, বালিয়াজুড়ি, বালুয়াবিজনাবুড়ি,
বেমালিয়া, মধ্যগঙ্গা, রোপা, লংযুন, লাহুর, সোনাই, হাওড়া, হুরুল ইত্যাদি।
২১. দর্শনীয় স্থান : শহীদ স্মৃতিসৌধ, ফারুকী পাক, কাল ভৈরব বিগ্রহ, বীর শ্রেষ্ঠ
মোস্তফা কামালের সমাধি, কাশহীদ জামে মসজিদ, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খার
বসতবাড়ি, বাশি হাতে শিব মন্দির, কোল্লাপাথর সমাধি, আরিফাইল মসজিদ,
হাতিরপুল, আনন্দময়ী কালিমুর্তি ও বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি।
২২. জেলার ঐতিহ্য : তিতাস নদী, আচিল বা হাসলি মোরগ ও বারি মেলা, পুতুল।
নাচ ইত্যাদি এখনো এ জেলার ঐতিহ্য বহন করে আছে।

No comments:

Post a Comment